top of page
Search
Writer's pictureAyan Barua

এপারেল ইন্ডাস্ট্রিতে ডিজিটালাইজেশন : ভবিষ্যতের গন্তব্য কোনদিকে ? পর্ব ২- ডিজিটাল-ইকোসিস্টেম!


গত পর্বে বাংলাদেশের গারমেন্টস শিল্পে ডাটা ম্যানেজমেন্টের পদ্ধতি হিসেবে এক্সেলের বহুল প্রচলন এবং এর ফলে উদ্ভব হওয়া ডাটা ডুপ্লিকেশন এবং ডাটা বটলনেক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম (লিঙ্ক : shorturl.at/uANV3) । সেখানে আমার এক পূর্ববর্তী কোম্পানিতে ইমপ্লিমেন্ট করা সাপ্লাই চেইন ট্রেকিং রিপোর্ট নিয়ে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে নক করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। তার মধ্যে আমার পরিচিত এক ভার্সিটী জুনিয়র আমাকে জিজ্ঞেস করল, তাহলে কি যদি আমাদের কোম্পানি ইআরপি ইমপ্লিমেন্ট করে তাহলে আমরা এক্সেলের পরিবর্তে সব ডিপার্টমেন্টের ডাটা এক জায়গায় ট্রেকিং করতে পারব? আপাতদৃষ্টিতে এই সহজ প্রশ্নের উত্তর অনেক জটিল। আমি চেষ্টা করব যতটা পারা যায় সহজবোধ্য করে এই ব্যপারে আমার দৃষ্টিকোনকে উপস্থাপন করতে। বর্তমানে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক প্রকারের ডিজিটাল সলুশ্যন ব্যবহার হয়ে থাকে। ব্যপারটা নিজের মোবাইল ব্যবহার করার উদাহরন থেকে চিন্তা করুন। আপনার নিজের স্মার্টফোনেই শুধুমাত্র মেসেজ এর মাধ্যমে কথা বলার জন্য একাধিক এপ আছে। মোবাইলের মেসেজিং এপ দিয়ে আপনি সিম থেকে মেসেজ পাঠান, হোয়াটসএপ দিয়ে মূলত অফিসিয়াল মেসেজ আদান প্রদান করেন, ফেইসবুক মেসেঞ্জার দিয়ে নিজের সোশাল মিডিয়ার বন্ধুদের সাথে কথা বলেন, উইচ্যাট দিয়ে চাইনিজ সাপ্লায়ারদের সাথে কথা বলেন এবং ইমো দিয়ে হয়ত মধ্যপ্রাচ্যে থাকা প্রবাসী আত্মীয়ের সাথে কথা বলেন। সব এপের কাজ একই রকম, কিন্তু প্রয়োজন ভেদে আপনারা ভিন্ন ভিন্ন এপ ইউস করেন। এখন আমরা যদি চিন্তা করি যে ফেইসবুক মেসেঞ্জার ছাড়া অন্য কোন এপ ব্যবহার করব না, তাহলে চিন্তা করুন কেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। আমাকে সব বায়ার এবং অফিসিয়াল কলিগদের ফেইসবুকে এড করতে হবে, ইন্টারনেট না থাকলে কাউকে মেসেজ পাঠাতে পারব না, এবং চাইনিজ সাপ্লায়ারদের সাথে কমিউনিকেশন বন্ধ কারন তাদের দেশে ফেইসবুক নেই। একটি কোম্পানিতে, স্পেসিয়ালি গার্মেন্টস কোম্পানিতে শুধুমাত্র ইআরপি দিয়ে সকল ডিপার্ট্মেন্ট এর সকল ডাটা ট্রেক করা অনেকটা একই অবস্থার পূনরাবৃত্তি ঘটায়।


এই ব্যপারে ডিপ ডাইভ করার আগে একটু ইআরপি এর উৎপত্তিগত ইতিহাস সম্পর্কে একটু জেনে নেই। যদিও টেকনিকালি ১৯৬০ দশক থেকেই বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের ম্যাটেরিয়াল রিকোয়ারমেন্ট প্ল্যানিং এর জন্য বিশাল মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করত, ১৯৭২সালে প্রথম SAP জার্মানিতে তাদের যাত্রা শুরু করে, এবং ১৯৭৩ সাথে ফাইনান্স কন্ট্রোলের জন্য ফাইনান্সিয়াল একাউন্টিং সিস্টেম লঞ্চ করে। ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিতে ইআরপি প্রথম এডাপ্ট করে সকল বড় ফাস্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কন্সিউমার গুডস (FMCG) কোম্পানিগুলো, যাদের সিংহভাগই মেশিন বেইসড প্ল্যান্ট। প্রডাকশন হাউজে খুব বেশি মানুষের ইনভল্ভমেন্ট না থাকার কারনে এইসব ইন্ডাস্ট্রিতে ভ্যারিয়েশনের পরিমান অনেক কম। মোদ্দা কথায়, ইআরপি এর গোল ছিল, আমি কি সেল করব, তার জন্য কি বানাব, বানাতে কি কেনা লাগবে, এবং শেষমেষ কি বানাতে পারলাম, এই সমস্ত ট্রাঞ্জেকশনগুলোকে ট্র্যাক করা। এবং এই সব ট্রাঞ্জেকশন শেষে আমার ফাইনান্সিয়াল আউটপুট কি , সেটা বের করা। অতীতের সেই অবস্থা থেকে ইআরপি আজকে অনেকটুকুই বিবর্তিত হয়েছে, সময়ের প্রয়োজনে এসেছে নিত্য নতুন আবিষ্কার। FMCG এর বাইরে গার্মেন্টসের মতন ম্যান-মেশিন এনভাইরন্মেন্টের প্রডাকশন হাউজেও তারা কাজ করেছে। কিন্তু ইনফ্রা-স্ট্রাকচারগত ভাবে তারা এখনো মূলত ট্রাঞ্জেকশন রেকর্ডিং টুল। এখন প্রশ্ন হলস, গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে আর কি কি ডিজিটাল সফটওয়্যার প্রয়োজন? নিচের ছবির দিকে তাকালে দেখা যাবে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত ডিজিটাল সল্যুশনগুলোকে মোটামুটী এই সকল ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়।



এই প্রত্যেকটি সল্যুশনই একটি স্মার্ট ফ্যাক্টরির ডিজিটালাইজেশনের জন্য জরুরি। এবং ইআরপি এখানে অন্যতম মুখ্য ভুমিকা পালন করলেও সন্দেহাতিতভাবেই সমস্ত রিকোয়ারমেন্ট পূরন করে না। তার দরকার প্রতিটি অংশের জন্য দরকারী সল্যুশন ইমপ্লিমেন্ট করে তাদের মধ্যকার ইন্টিগ্রেশন করা, যেন তারা কম ডাটা গুলো নিজেদের মধ্যে শেয়ার করতে পারে। এতে করে দুইটি সুবিধা হবে, প্রথমত ডাটা এন্ট্রির কমে আসবে, ডাটা ম্যানিপুলেশন এবং ডাটা এরর হবে না। দ্বিতীয়ত, সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের কাছে কোম্পানির “One version of truth” প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা যেমন একটি সুইং লাইন থেকে সবচেয়ে ভাল আউটপুট পাওয়ার জন্য ব্রাদার্স, জুকি, পেগাসাস, কানসাই, ভিভিম্যাক সব কোম্পানির মেশিন দিয়েই লে-আউট করি, তেমনি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ সল্যুশন এর মিশ্রনে “ডিজিটাল – ইকোসিস্টেম” তৈরি না করলে ডিজিটাইজেশনের সর্বোচ্চ আউটপুটও পাওয়া সম্ভব না!


২০২০ সালে এসে আমাদের গার্মেন্টস এন্ট্রপ্রেনারদের অনুধাবন করতে হবে, পোস্ট – কোভিড সিচুয়েশনে টিকে থাকতে হলে তাদের প্রতিটি ডিসিশন হতে হবে ডাটা-ড্রিভেন। ১৯৮০ এর দশকের মতন গাট ফিলিংস এর উপর নির্ভর করে ডিসিশন নিয়ে থাকলে কমে আসা প্রফিট মার্জিন লসের খাতায় পরিনত হয়ে বেশি সময় লাগবে না। আশার কথা, মোটামুটী সিংহভাগ গার্মেন্টসই তাদের ডিজিটাল জার্নি শুরু করেছে, অথবা করার চিন্তা করছে। বর্তমান পরিস্থিতি আসলে গত ৪-৫ বছর ধরে চলে আসা ট্রেন্ডেরই অংশ। আমরা যারা ইন্ডাস্ট্রিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত , তারা দেখেছি একটি কন্সোলেডিশন হয়ে আসছিল,, আমাদের দেশের অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট পূরন করতে না পেরে, কিন্তু বছর বছর এক্সপোর্টের সংখ্যা বেড়ে চলছিল। তার মানে একটিই, “তূলনামূলকভাবে সাস্টেইনেবল কোম্পানিরা গ্রো করেছে, এবং নন-সাস্টেইনেবল কোম্পানিরা বন্ধ হয়ে গিয়েছে”। কোভিড ১৯ শুধুমাত্র এই প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করেছে, যে কন্সোলেডিশন আগামী ৫ বছরে হওয়ার কথা ছিল তা হয়ত আগামী ১ বছরেই হবে। এন্ট্রেপ্রেনারদের এখনি সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি ১ম দলে যোগ দিবেন নাকি দ্বিতীয়। আজ এই পর্যন্তই, আগামীদিন আশা আছে এই সল্যুশনগুলো নিয়ে প্রাথমিক আলোচন করার। আমি আশা রাখব ইন্ডাস্ট্রিতে যারা রেগুলার এই ব্যপারগুলো নিয়ে কাজ করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ!



Ayan Barua is currently working with Coats Digital as Business Development Manager for Bangladesh . He has worked in Four H Group, Fakir Fashion and Epyllion Group in IE and Supply Chain Department. He is an Industrial Engineer Graduate From Shahjalal University Of Science and Technology.






3 views0 comments

Comments


bottom of page